Tuesday, October 30, 2012

রামুর ঘটনায় দায়ীরা চিহ্নিত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

Details
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর

লেখক: ইত্তেফাকরিপোর্ট  |  মঙ্গলবার, ৩০ অক্টোবর ২০১২, ১৫ কার্তিক ১৪১৯


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন, কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ মন্দির ও বসতিতে হামলার ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন ঘটনার পেছনে যারা ভূমিকা রেখেছে তাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রামুর ঘটনার পিছনে দেশ ও দেশের বাইরের উস্কানি ছিল। ঘটনার পেছনে নোঙরা রাজনীতি ও সামপ্রদায়িক উস্কানি ছিল। দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করাই ওই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল। তদন্তে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে মোট ১১টি সুপারিশ এসেছে এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছে।
বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে বিএনপির নিজেদের তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বিরক্ত প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশে সরকার নেই? রাষ্ট্র নেই? তারা তাদের কোন প্রভুদের কি দিয়েছে তা নিয়ে বলার কিছু নেই।
ফেইসবুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে রামুর বৌদ্ধবসতিতে হামলা হয়। সাতটি বৌদ্ধ মন্দির এবং প্রায় ৩০টি বাড়ি ও দোকান পুড়িয়ে দেয়া হয়। হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয় আরো শতাধিক বাড়ি ও দোকানে। পরদিন টেকনাফ, উখিয়া এবং চট্টগ্রামের পটিয়ায় একইভাবে হামলা হয়।
Details

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রতি সাংস্কৃতিক জোটের সহমর্মিতা

লেখক: ইত্তেফাকরিপোর্ট  |  মঙ্গলবার, ৩০ অক্টোবর ২০১২, ১৫ কার্তিক ১৪১৯

প্রবারণা পূর্ণিমা তিথি
সাম্প্রদায়িকতার অন্ধকার দূর করে মানুষের মনে সম্প্রীতির আলো ছড়াতে গতকাল সোমবার  ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবরের উন্মুক্ত মঞ্চ প্রাঙ্গণ একজোট হয়েছিলেন দেশের সাংস্কৃতিক কর্মীরা। প্রবারণা পূর্ণিমা তিথিতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতি সহমর্মিতা ও ধর্মান্ধদের প্রতি নিন্দা জানাতে গতকাল সন্ধ্যায় এই মোমবাতি প্রজ্বলন পর্বের আয়োজন করেছিল । ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবরের উন্মুক্ত মঞ্চ প্রাঙ্গণ মোমবাতির আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছিল।
এ আয়োজনে উপস্থিত সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতৃবৃন্দরা বলেন, রামু-উখিয়ায় ধর্মান্ধ দুষ্কৃতকারীরা বৌদ্ধমন্দির পুড়িয়ে বাংলাদেশের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য ধ্বংসের অপচেষ্টা চালিয়েছে। এ ঘটনায় বৌদ্ধ জনগণের পাশে থেকে দেশের সাংস্কৃতিক কর্মীরা ক্ষোভ, নিন্দা ও ধিক্কার জানান। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সরকারের প্রতি এই ধর্মান্ধ উগ্রপন্থিদের দমনে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান।
এতে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক,  বিশিষ্ট কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসিরউদ্দিন ইউসুফ, সহ-সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ।

রামুতে নিরানন্দ পরিবেশে প্রবারণা পূর্ণিমা পালন

লেখক: কক্সবাজার প্রতিনিধি  |  মঙ্গলবার, ৩০ অক্টোবর ২০১২, ১৫ কার্তিক ১৪১৯
ফানুস উড়ানো হয়নি
শোকাবহ পরিবেশে রামুতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করেছেন। তবে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী জাহাজ ভাসানো ও ফানুস উড়ানো উত্সব এবার পালন করা সম্ভব হয়নি। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে সংঘটিত সহিংস ঘটনার একমাস পর রামুর কেন্দ্রীয় সীমা বিহারসহ বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করা হয়।
এবারের বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দিরে আয়োজনের মধ্যে ছিল— বুদ্ধপূজা, মহাসংঘদান, ধর্মসভা, হাজার প্রদীপ প্রজ্বলন ও পুড়ে যাওয়া মন্দিরের স্থলে নতুন মন্দিরের প্রাথমিক ভিত্তিপ্রস্তর (হোত্তুর) স্থাপন। গতকাল সোমবার ভোরে রামু সীমা বিহারের অধ্যক্ষ দক্ষিণ চট্টলার সর্বোচ্চ বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের’র সভাপতিত্বে এক ধর্মীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, এক মাস আগে রামুর হাজার বছরের বৌদ্ধ কৃষ্টি-ঐতিহ্যের স্মারকগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মে অহিংসার কথা বলা হয়েছে। তাই আমাদেরও শুদ্ধ হওয়ার জন্য দেশ ও মানুষের কল্যাণ কামনায় আমরা মহাসংঘদানের আয়োজন করেছি।
এদিকে গতকাল দুপুরে রামু বৌদ্ধ যুব পরিষদ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে এক মৌন র্যালির আয়োজন করে। রামু হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবীর পাশাপাশি সামপ্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার মৈত্রীময় আহবানের বিভিন্ন ব্যানার ও ফেষ্টুন প্রদর্শন করা হয়। রামু বৌদ্ধ যুব পরিষদের আহবায়ক রজত বড়ুয়া রিকু বলেন, শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে অহিংসার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশবাসীর সহযোগিতায় আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
গতকাল বিকালে সীমা বিহার প্রাঙ্গণে বৌদ্ধ বিহারের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের। সন্ধ্যায় হাজার প্রদীপ প্রজ্বলন ও সব ধর্মের মানুষের শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনার মধ্যদিয়ে শেষ হয় শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা।
Details

কোন ধর্ম, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর আঘাত দেখতে চাই না

লেখক: বিশেষ প্রতিনিধি  |  মঙ্গলবার, ৩০ অক্টোবর ২০১২, ১৫ কার্তিক ১৪১৯
প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ প্রতিনিধিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের সঙ্গে লুকোচুরি খেলা বন্ধের পাশাপাশি কষ্টার্জিত গণতন্ত্র ধ্বংসের অশুভ ষড়যন্ত্র নস্যাত্ করতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুদৃঢ় এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা জাগ্রত করতে হবে। জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর যাতে কেউ খেলতে না পারে সেজন্য সবার সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, কোন ধর্ম, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় অনুভূতিতে কোন ধরনের আঘাত আমরা দেখতে চাই না। সকল ধর্মের মানুষ অবাধ, শান্তিপূর্ণভাবে এবং উত্সবমুখর পরিবেশে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে।
রবিবার দুপুরে গণভবনে প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে গণভবনে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের শুরুতেই সবাইকে প্রবারণা পূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ধর্ম যার যার, উত্সব সবার। ধর্মীয় সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী বলে তার সরকার ধর্ম, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে কোন প্রকার আঘাত পছন্দ করে না। সকল ধর্মের মানুষ উত্সবমুখর পরিবেশে যাতে উত্সব পালন করতে পারে, সে পরিবেশ আমরা সৃষ্টি করেছি। তিনি বলেন, সবাই মিলে এই দেশটাকে স্বাধীন করেছি। সবাই এই দেশে সমান অধিকার নিয়ে থাকবে। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া সংবিধানে এসব অধিকার নিশ্চিত করা হলেও ১৯৭৫ সালে তার হত্যাকাণ্ডের পর সামরিক শাসকরা সংবিধান কাটাছেড়া ও পরিবর্তন করে এসব অধিকার কেড়ে নেয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী করার জন্য জনগণের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই বিজয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধার ও জনগণের সমঅধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের সমঅধিকার নিশ্চিত এবং অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকল ধর্মেই মানবতাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলা হয়েছে। এক ধর্মের প্রতি আরেক ধর্মের সম্মান দেখানোর কথা বলা হয়েছে, রয়েছে শান্তির বার্তা। কিন্তু মাঝে মধ্যে আমাদের সমাজে এ ধরনের আত্মঘাতী ঘটনা ঘটে, যে পথ ধরে আসে অশান্তি এবং সেখানে থাকে না কোন ভ্রাতৃত্ববোধ। অনেকের মধ্যে চলে আসে পশুত্ব। তিনি ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। রামুর ঘটনায় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হারানোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের কষ্ট— আপনারা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হারিয়েছেন। আর আমরা শত বছরের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্য হারালাম। তিনি বলেন, এভাবে গান পাউডার ছিঁটিয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে পারে বলে কেউ ভাবেনি। রামুতে ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করতে গিয়ে তার চোখে পানি চলে এসেছিলো উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৌদ্ধ পল্লীতে হামলার তদন্ত চলছে। কারা কোন উদ্দেশ্যে এই পৈশাচিক ঘটনা ঘটালো তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে এবং জড়িত অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি দেয়া হবে।
সেনাবাহিনী, বিজিবি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ওই হামলা প্রতিহত না করলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তো। তিনি বলেন, কোনো মেয়ে যেনো ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা নিশ্চিত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্যাগোডাগুলো সেনাবাহিনী এবং বিজিবি নির্মাণ করে দেবে বলে তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের সময়ে অর্থনীতিসহ বিভিন্ন খাতে সফলতা ও উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বলেন, সরকার ইতিমধ্যে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে এবং গত চার বছরে অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে দেশে ছয় শতাধিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তিনি বলেন, সরকার এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে যেখানে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকল মানুষ তাদের সমঅধিকার ভোগ করবে এবং পূর্ণ স্বাধীনতাসহ উত্সবমুখর পরিবেশে তাদের ধর্ম পালন করবে। জনগণের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রবারণা পূর্ণিমায় ফানুস ওড়ানোর ঘোষণা দেন বৌদ্ধ ধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু সংঘরাজ ধর্মসেনা মহাথেরো। বৌদ্ধ সমিতির চেয়ারম্যান অজিত রঞ্জন বড়ুয়া প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে সরকারি ছুটি ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। এই আহ্বানের জবাবে প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে ঐচ্ছিক ছুটি থাকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা সরকারি চাকরি করেন, তারা সবাই ঐচ্ছিক ছুটি নিতে পারেন। আপনাদের ছুটি আমরা নিয়ে কী করবো?
রাজধানী ঢাকায় আগামী ৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ সম্মেলন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চান শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, যতটুকু সহযোগিতা করা প্রয়োজন তা করা হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বৌদ্ধ ফেডারেশনের সভাপতি বিশ্বপতি বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ড. কনক কুমার বড়ুয়া, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সজল তালুকদার বড়ুয়া, ঢাকা বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ধর্মমিত্র মহাথেরো প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও বৌদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সুপ্তা ভূষণ বড়ুয়া।

আজ শুরু হচ্ছে কঠিন চীবর দান উত্সব

লেখক: খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি  |  মঙ্গলবার, ৩০ অক্টোবর ২০১২, ১৫ কার্তিক ১৪১৯
আজ মঙ্গলবার থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলার ২৫টি উপজেলায় বৌদ্ধ বিহারগুলোতে অনুষ্ঠিত হবে বৌদ্ধ সমপ্রদায়ের প্রধান দানোত্সব কঠিন চীবর দানোত্সব। এ উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পাড়ায়-পাড়ায় শেষ হয়েছে কঠিন চীবর দানোত্সবের সার্বিক প্রস্তুতি। আজ পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়ার সাধনাটিলা বন বিহারে মহাপরিনির্বাণ লাভকৃত বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু বনভন্তের শিষ্যসঙ্গের উপস্থিতিতে মাসব্যাপী কঠিন চীবর দানোত্সবের সূচনা হবে। এ উত্সব শেষ হবে ২৭ নভেম্বর কাউখালীর বিনয়াঙ্কুর, বাঘাইছড়ির বনানী ও বরকলের আইমাছড়া বন বিহারে। রাঙ্গামাটির রাজবন বিহারে আগামী ২২ ও ২৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সর্ববৃহত্ দানোত্সব। ৮ নভেম্বর খাগড়াছড়ির ধর্মপুর আর্য্য বন বিহারে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় বৃহত্তম দানোত্সব। তবে এ উত্সবকে ঘিরে বরাবরের মতো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দায়ক-দায়িকা, উপাসক-উপাসিকার অংশগ্রহণে বিহার প্রাঙ্গণ ধর্মীয় উত্সাহ-উদ্দীপনায় মুখরিত হয়ে উঠার কথা থাকলেও রাঙ্গামাটি কলেজের সহিংসতা এবং রামু আর উখিয়ার হামলার ঘটনায় পাহাড়ি এ জনপদের বৌদ্ধদের মনে এখনো নানা আশংকা ও ভীতি কাজ করছে। অপরদিকে রামু ও উখিয়ার ঘটনার প্রতিবাদে এবারের কঠিন চীবর দানোত্সবে ফানুস উড়ানো ও ধর্মীয় সাংস্কৃতিক আনুষ্ঠানিকতার কর্মসূচি বর্জনের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এ ভয় ও সংশয় আরো বেড়েছে।
বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘের দীর্ঘ তিনমাস বর্ষাবাস পালনের পর প্রতি বাংলা বছরের আশ্বিনী পূর্ণিমায় আশ্বিন ও কার্তিক মাসে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী বিশেষ করে চাকমা, মারমা, তঞ্চংগ্যা, চাক ও বড়ুয়া সমপ্রদায় তাদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উত্সব এ কঠিন চীবর দান পালন করে থাকেন। ধর্মীয় এই উত্সব পালনের জন্য বাড়িতে-বাড়িতে, পাড়ায়-পাড়ায় ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহে এ সময়ে বিরাজ করে উত্সবের আমেজ। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মনে এই সময়ে একটি ধারণা শুধু বিরাজ করে, কিভাবে শ্রদ্ধেয় ভিক্ষু সংঘকে একটি কিছু দান করে পুণ্য অর্জন করা যায়। আর এজন্য শিশু থেকে শুরু করে আবালবৃদ্ধবণিতা কঠিন চীবর দানোত্সবে নানা দ্রব্যাদি ভিক্ষু সংঘের উদ্দেশে দান করে থাকেন। ভক্তি-শ্রদ্ধা সহকারে দায়ক-দায়িকারা এ সময়ে মন্দির ও বিহারে গিয়ে মহামতি ভগবান বুদ্ধের প্রতি ও অনুত্তর ভিক্ষু সংঘের প্রতি সশ্রদ্ধচিত্তে প্রণাম জানিয়ে পঞ্চশীল ও অষ্টশীল গ্রহণ করে থাকেন।

প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপিত



No comments:

Post a Comment