Thursday, October 11, 2012

বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে দু:খ প্রকাশ হোক রাষ্ট্রীয়ভাবে




ক্যাটাগরী: 

Untitled

ফেসবুকে একে একে কয়েকজন বন্ধুর প্রোফাইল পিকচার কালো হয়ে গেল। কালো ব্যানার ধারণ করে ওরা বলতে চাইল, আমরা দু:খিত! আমরা লজ্জিত! ফেসবুকের কোন একটি পাতা (লিংক) থেকে আহবান ছড়িয়ে পড়ে- ৮ অক্টোবর সকলে একযোগে ফেসবুকে প্রোফাইল পিকচারে কালো ব্যানার ধারণ করি। প্রতিবাদ জানাই রামুতে ঘটে যাওয়া অবমাননাকর ঘটনার। মানবতা লংঘনের ঘটনার। দু:খ প্রকাশ করি অবনত মস্তকে শান্তির অনুসারীদের কাছে যাদের মৌন প্রার্থনায় নৃশংসতা চালাতে দ্বিধা করেনি কতিপয় উগ্রপন্থীরা।
রামুতে ঘটে যাওয়া ঘটনায় বৌদ্ধ মন্দিরে নয়, আমাদের সম্প্রীতির বিশ্বাসে ফাটল ধরেছে। আমাদের আস্থা ’গান পাউডারে’ চকিতেই দগ্ধ হয়েছে। সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরু’র বিভেদ কি তবে আর কমানো গেল না?
এখনো তদন্ত চলছে। ঘটনায় ইন্ধনদাতাদের সন্ধান পেতে কতদিন লাগে কে জানে! আগুন নেভানো যায়। মন্দির গড়ে দেয়া যাবে। পুনর্বাসনও হবে। সাথে এ দল আর ও দলের রাজনীতি বোনাস হিসেবেও মঞ্চস্থ হবে। কিন্তু কিন্তু তার চাইতেও বড় কথা, যে ভাঙ্গন ধরানো হল, তা জোড়া লাগবে তো? যে শংকা প্রতিটি চোখে ঝিলিক দেবে, তাকে আস্থা দেবে কে?
এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না
এই জল্লাদের উল্লাসমঞ্চ আমার দেশ না
- নবারুন ভট্টাচার্য্য
শংকায়িত চোখ ক্রমে অবিশ্বাসী হয়ে উঠবে অন্যের প্রতি। দানা বাঁধবে ক্ষোভ। সেই ক্ষোভও কি ফুঁসে উঠবে না? বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনাটিকে ডায়েরির ’সাম্প্রতিক’ হিসেবে তুলে রেখে দু’দিন পর ভুলে গেলে আগামিতে অনাহুত ঘটনার কমতি হবে না। তাই সচেতন হতে হবে রাষ্ট্রিয় পর্যায় থেকেও।
রাষ্ট্রকে কোন একটি বিশেষ ধর্মে পরিচিত না করার এখনই সময়। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে দু:খ প্রকাশ হোক রাষ্ট্রীয়ভাবে। প্রয়োজনে একদিন “দু:খ প্রস্তাব” উত্থাপিত হোক সংসদে সরকারি-বিরোধী দল নির্বিশেষে। একদিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত হোক।
প্রতিটি চ্যানেলে যেখানে ইসলামি অনুষ্ঠানে শুক্রবার ভরপুর হয়ে ওঠে, সেখানে মওলানারা দু:খ প্রকাশ করুক। বায়তুল মসজিদে জুম্মার নামাজের পর ধর্মীয় সম্প্রীতির আহবান ও দু:খ প্রকাশ হোক। দেশের সকল ওলামা-মাশায়েখ দল/সংস্থাগুলো দু:খ প্রকাশ করুক …ধর্ম মন্ত্রনালয় উদ্যোগী হোক অনতিবিলম্বে …।
তবেই বোঝা যাবে আমরা কতটা অসাম্প্রদায়িক … তবেই বোঝা যাবে আমাদের সম্প্রীতি কতটা সত্য ইচ্ছা… রাষ্ট্রকে ধর্ম নিরপেক্ষকরণ চাই! সংখ্যা লঘু শব্দের ব্যবহার চাই না আর। ”বিধর্মী” শব্দের ব্যবহার হোক মানবাধিকার লংঘনের সামিল।
রাষ্ট্রকে দু:খিত হওয়া চাই … সান্ত্বনা নয়। ঘটনা তড়িৎ ধামাচাপা দেয়া নয়, রাষ্ট্রকে বলিষ্ঠ প্রমাণ দিতে হবে যার যার ধর্ম তার তার স্বাধীনতা, তার তার বিশ্বাস ।
আর আমাদের অনুধাবন করতে হবে – মানবতাই ধর্ম। দর্শনই ধর্ম।


রামু প্রসঙ্গ: বিভ্রান্তি মূলক ছবি পোস্ট করে ধর্ম ব্যবসায়ীরা কী প্রমাণ করতে চাইছে?

ক্যাটাগরী: 

সুলতান মির্জা 

প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, আর তাই চিন্তা না করে উপায় নেই। সহজ সমীকরণ করে ভেবে দেখলে বুঝা যায় রামুর বৌদ্ধ মন্দিরের হামলার বিষয়ে ধর্ম ব্যবসায়ী ইসলাম এর লিজ গ্রহীতারা জড়িত। কী অবাক হলেন? মোটেই অবাক হবেন না। বিডি ব্লগের জনপ্রিয় ব্লগার আইরিন সুলতানার একটি পোস্ট বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে দু:খ প্রকাশ হোক রাষ্ট্রীয়ভাবে উল্লেখিত পোস্টের মন্তব্য গুলো দেখলে স্পষ্ট বুঝা যায়, যে রামুর বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার পিছনে উদ্দেশ্য কী ছিল। আমি দেখেছি সেই পোস্টের কিছু ছবি ওয়ালা মন্তব্যের চালচিত্র। অবাক হয়েছি যে ভার্চুয়াল জগতের ছাগল ছানার খোয়ার বলে খ্যাত, স্থান হতে ফটোশপের দীক্ষা নিয়ে বিভিন্ন ব্লগ, ফেসবুক এ নামে বেনামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে, কারণে অকারণে বিপথ গামী উগ্রপন্থী, ধর্মীয় লেবাসধারী কিছু শয়তান প্রকৃতির অমানুষ কী করে ধর্মীয় সহিংসতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিচ্ছে সাধারণ মানুষের মাঝে। কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধ মন্দির ও তাদের বসতিতে হামলার পিছনে যে ধর্মীয় উত্তেজনাকে নিখুঁত ভাবে পরিচালিত হয়েছে এইসব ধর্ম ব্যবসায়ীদের ক্রমেই তা স্পষ্ট হচ্ছে।
যদি তাই না হতো তাহলে কেন এই সব বীভৎস ছবি গুলো প্রচার করছে জামাত-শিবিরের ব্লগারেরা? এই ছবি দিয়ে তারা কী প্রমাণ করতে চায়, যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুসলিমদের উপর নির্যাতনের প্রতিশোধ হিসেবে রামুর বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা করে তার প্রতিশোধ নেওয়া হয়েছে ? মোটেই অমূলক ভাবে নিচ্ছি না, কেন নয় আমাদের এই ব্লগ না শুধু বিভিন্ন ব্লগ গুলোতে চিহ্নিত জামাত-শিবিরের ব্লগারেরা এই ধরনের প্রচার কার্য চালিয়ে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
খেয়াল করলে দেখা যাবে বিডি যাবে ইদানিং অতিথি মন্তব্যকারিরা এই ধরনের ছবি সংযুক্ত করে মন্তব্য করে যাচ্ছে। যদিও এই ধরনের ছবি গুলো ইসলাম ধর্ম কে নিয়ে সংগঠিত কোনও সহিংসতার কারণে হয়নি। তাহলে কেন এই ধরনের অপপ্রচার করছে জামাত-শিবির এর কর্মী খ্যাত ব্লগারেরা ? উদ্দেশ্য একটাই ধর্মীয় উত্তেজনা বৃদ্ধি করে জনসাধারণের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে দিয়ে ফায়দা লুটে নেওয়া। আর তাই আমাদের প্রয়োজন জনসচেতনতার যেকোনো সহিংসতা পূর্ণ ছবি দেখে যেন আমরা ছবির পিছনে না দৌড়িয়ে ছবির কারণ জানার চেষ্টা করি। যেমন কী কারণে গড়েছিল এই ছবির ইতিহাস ইত্যাদি।
পরিশেষে বলে শেষ করতে চাই, বিভ্রান্তি মূলক ছবি প্রচার করে ফায়দা লোটার চিন্তা করে যারা শান্তির ধর্ম ইসলাম কে বিতর্কিত করতে চাচ্ছে, আমি মনে করি সেই সব কুলাঙ্গারদের কারণে ইসলাম ধর্মের অবস্থান হালকা হয়ে যাচ্ছে। বিতর্কিত হচ্ছে এই শান্তির ধর্মটি। আমি মনে করি এই সব কুলাঙ্গাররা ইসলাম ধর্মকে ক্ষয়ে যাওয়ার শেষ প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। তারা ইসলাম ধর্মে অনুসারী না, তারা কাফের, তারা কুলাঙ্গার, তারা অপবিত্র।
অতএব, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানাচ্ছি এদের চিহ্নিত করে এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
@সুলতান মির্জা।



No comments:

Post a Comment