২৪ অক্টোবর বুধবার ২০১২ খ্রি
আবার গড়ে উঠছে বাড়িঘর ও মন্দির রাতের আঁধারে ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের আগুনে হারানো বাড়িঘর ও মন্দির গড়ে উঠছে আবার রামুতে। আগের মতো সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাসের স্বপ্ন এই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের। কক্সবাজারের রামু উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধরা ফের তাদের বসতঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। শিগগিরই শুরু হবে তিগ্রস্ত বৌদ্ধ বিহার পুনর্নির্মাণের কাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ায় আবারো শান্তি ও সম্প্রীতির সঙ্গে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন তারা। এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ওই অঞ্চলের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু ও রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের অধ্যক্ষ পণ্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথেরো। তিনি বলেন, বিপথগামীরা একদিন ঠিকই তাদের ভুল বুঝতে পারবে। তারা দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য-কৃষ্টির কতটুকু ক্ষতি করেছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। খবর বিডিনিউজের।
ফেইসবুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে রামুতে ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা সাতটি বৌদ্ধ বিহার ও ২৪টি বসতঘরে আগুন দেয়। ওই সময় শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়। ওই হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের কেউ কেউ কাঠ আর বাঁশের বেড়া দিয়ে বসতবাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত রয়েছেন। আবার অনেককে দেখা গেছে, ইটের বাড়ি তৈরির নির্মাণ সামগ্রী জড়ো করতে। সরকারের পাশাপাশি অনেক সহৃদয় ব্যক্তিও হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বলে জানান তারা।
হামলার পরদিনই রামুতে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সেখানে যান। সান্ত্বনার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের উঠে দাঁড়ানোর জন্য আর্থিক সহযোগিতা দেন প্রধানমন্ত্রী। পরিদর্শনের সময় আগুনে পোড়া প্রতি বাড়ির মালিককে দুই লাখ টাকা এবং ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে দেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি পুড়ে যাওয়া বৌদ্ধ মন্দিরগুলো পুনর্নির্মাণের জন্য সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরকে দায়িত্ব দেন তিনি।
রামুর বৌদ্ধ ঐক্য ও কল্যাণ পরিষদ ও কেন্দ্রীয় সীমা বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তরুণ বড়ুয়া বলেন,সেনাবাহিনী, বিজিবি ও স্থানীয় প্রশাসন পুনর্নির্মাণ কাজ সার্বক্ষণিক তদারক করছে। সেনা সদস্যরা ইতোমধ্যে মন্দিরের নকশা,পরিমাপসহ প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন করে নির্মাণ সামগ্রী ভস্মীভূত বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণে আনা শুরু করেছে। আগামী ২৯ অক্টোবর বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিন থেকে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনের মধ্য দিয়ে বিহার পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে জানান ওই এলাকার বাসিন্দা দর্পণ বড়ুয়া। রামু প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুনীল বড়ুয়া বলেন, সহিংসতার পর সরকারি-বেসরকারী পর্যায়ে অনেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ায় ক্ষতিগ্রস্তরা আবার উঠে দাঁড়াচ্ছে। এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
No comments:
Post a Comment