Friday, October 19, 2012

সংহতি সমাবেশে বক্তারা এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা রাষ্ট্রের জন্মসনদের পরিপন্থী



বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | তারিখ: ২০-১০-২০১২

রামুর বৌদ্ধপল্লিতে সহিংসতার প্রতিবাদে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে নাগরিক প্রতিবাদ ও �
রামুর বৌদ্ধপল্লিতে সহিংসতার প্রতিবাদে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে নাগরিক প্রতিবাদ ও সংহতি সমাবেশে সরদার ফজলুল করিমসহ (ডান থেকে দ্বিতীয়) বিশিষ্টজনেরা
ছবি: প্রথম আলো
 রাজধানীতে গতকাল শুক্রবার এক নাগরিক প্রতিবাদ ও সংহতি সমাবেশে বক্তারা বলেন, রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ায় বৌদ্ধবিহার ও বসতিতে হামলার ঘটনায় জাতিগত ও ধর্মীয় সব সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মধ্যে গভীর আস্থাহীনতা তৈরি করেছে। তাঁরা বলেন, এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মসনদের পরিপন্থী।‘অসাম্প্রদায়িক ও জাতিগত বৈষম্যমূলক বাংলাদেশ চাই’ দাবি সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে এ সমাবেশ থেকে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়।
দাবিগুলো হলো: রামু, উখিয়া ও পটিয়ায় বৌদ্ধবিহারে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে প্রধান করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন, এ ঘটনায় ব্যর্থ স্থানীয় প্রশাসনকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করা এবং দোষী প্রমাণিত হলে তাদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা, সময়সীমা বেঁধে দিয়ে রামু, উখিয়া ও পটিয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন; অবিলম্বে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ করা এবং প্রশাসন ও শিক্ষাব্যবস্থাকে প্রাথমিক স্তর থেকেই আধুনিক, অসাম্প্রদায়িক ও বিজ্ঞানমনস্ক করে গড়ে তোলা।
সমাবেশে গবেষক ও কলামলেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ রামুর ঘটনায় সরকারি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, এ ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক খেলা শুরু হয়েছে। ওই ঘটনায় যারা ইন্ধন দিয়েছে এবং প্রশাসনের যারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের শাস্তির সম্মুখীন করতে হবে।
গণ-ঐক্য কমিটির আহ্বায়ক পঙ্কজ ভট্টাচার্য দাবি করেন, রামু ও উখিয়ায় বৌদ্ধমন্দির ও বসতিতে হামলার ঘটনাটি ছিল শতকোটি টাকার একটি পূর্বপরিকল্পিত প্রকল্প। অঢেল টাকা দিয়ে বশীভূত করায় স্থানীয় প্রশাসন তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এই প্রশাসন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের প্রশাসন হতে পারে না, একে ভেঙে দিতে হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের একটি অসাম্প্রদায়িক সংবিধান ছিল। কিন্তু স্বৈরশাসকদের দ্বারা পরিবর্তিত হওয়ার কারণে একে আর সবার সংবিধান বলা যায় না। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, অতীতে সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জাতিসত্তার ওপর হামলার বিচার হয়নি বলেই সাম্প্রদায়িক শক্তি আবার হামলা করতে সাহস পাচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা অভিযোগ করেন, ওই হামলার পেছনে একটি বিশেষ শক্তির উসকানি ও সহযোগিতা ছিল।
প্রবীণ শিক্ষাবিদ সরদার ফজলুল করিম সমাবেশে উপস্থিত হয়ে সংহতি প্রকাশ করেন। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক কাবেরী গায়েন।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কুদ্দুছ, সিপিবির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সামসুজ্জামান, বৌদ্ধ ধর্মগুরু ধর্মমিত্র মহাস্থবির, সম্মিলিত সামাজিক সংগঠনের সভাপতি অজয় রায় প্রমুখ। এ ছাড়া সমাবেশে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সংহতি প্রকাশ করেন।


রামুর সহিংসতা

নাটের গুরু কারা

প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু | তারিখ: ২০-১০-২০১২
রামুর এক রাতের ঘটনায় শত শত বছরের পুরাকীর্তি, সভ্যতার নিদর্শন পুড়ে ধ্বংস হয়েছে। অনেকে এখন ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরির কথা বলছেন। সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস পাওয়া গেছে। কিন্তু অমূল্য পবিত্র বুদ্ধধাতু, তালপাতার পুঁথি, হরেক ভাষার ত্রিপিটক গ্রন্থ, বিভিন্ন দেশের অসংখ্য মহামূল্যবান বুদ্ধমূর্তি কি ফিরে পাওয়া যাবে? খুব তাড়াতাড়ি কি ফিরে আসবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি?
মানবিক সহযোগিতা আমরা পাচ্ছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে বিভিন্নভাবে আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছে, সে জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। তবে বৌদ্ধদের হূদয়ের রক্তক্ষরণ এখনো বন্ধ হয়নি।
ঘটনাটি ঘটেছে ধর্মীয় ইস্যুকে কেন্দ্র করে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত-শিবির, রোহিঙ্গা দল গোষ্ঠীগতভাবে আলাদা হলেও সম্প্রদায় কি আলাদা ছিল? ধর্ম সবাই পালন করুক আর না-ই করুক, সেদিন রাতে সবাই ধর্ম অবমাননার সংবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল।
রামুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন চলছে নানা টালবাহানা। সরকারি ও বিরোধী দলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা রামু পরিদর্শনে আসছেন। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দোষারোপ করছে। দেশে রাজনীতির লেবাসে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত, শিবির যারা বিভিন্ন দল আর মতে বিভক্ত, তারা সবাই এখন পূতপবিত্র বলে দাবি করছে। তা হলে ঘটনা কে ঘটাল? 
রামুর হাজার হাজার মানুষের প্রত্যক্ষ বয়ান ও অভিযোগকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। স্থানীয় প্রশাসনকে জবাবদিহির আওতায় আনা হচ্ছে না কেন? এই ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের স্বার্থে রামু থানার ওসি, কক্সবাজার জেলার এসপি, এএসপি, ডিসি সবাইকে বিবেচনায় আনা উচিত। রামু থানার সাবেক ওসির বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ উঠেছে। ১. ঘটনার রাতে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয়। ২. তিনি মিছিলকারীদের বলেছেন ইউনিফর্ম না থাকলে আমিও নেমে পড়তাম। ৩. চৌমুহনী চত্বরে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় তিনি উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। ৪. বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তাঁকে ফোন করলে তিনি লাইন কেটে দিয়েছেন। ৫. প্রায় প্রতিটি বৌদ্ধ গ্রামে গিয়ে সতর্ক অবস্থায় থাকা লোকদের নিরাপত্তার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে হামলাকারীদের সুযোগ করে দেন। ৬. প্রথম মিছিল যখন থানা প্রদক্ষিণ করে, তখন তাদের শান্ত না করে উল্টো উসকে দেন। ৭. পুলিশ সুপার তাঁকে ফোন করলে তিনি পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার আশ্বাস দেন। ৮. আর্মি, বিজিবি ও র‌্যাবকে যথাসময়ে ঘটনা অবহিত করেননি এবং সাহায্য চাননি। ৯. তিনি জামায়াতপন্থী। ১০. স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের অনুরোধ রক্ষা করেননি, ইত্যাদি।
সেই রাতে স্থানীয় সাংসদের কী ভূমিকা ছিল? তিনি কেন মাঝরাতে এত লোক নিয়ে মোটরবাইক শোডাউন করে রামুতে এলেন? সহিংসতা রোধে তাঁর কী ভূমিকা ছিল? ঘটনার সমাপ্তি না দেখে তিনি দ্রুত সরে পড়লেন কেন?
নেতা-নেত্রীরা বলছেন, এটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। পূর্বপরিকল্পিত হলে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানতে পারল না কেন? সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্ত ও গ্রেপ্তারকৃত ফারুক, মুক্তাদির এবং রামু থানার সাবেক ওসিকে ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। অভিযুক্ত ফারুক ও মুক্তাদিরসহ কারা প্রথম মিছিল করেছিল, মিছিলের নেতৃত্বে কারা ছিল, কারা প্রতিবাদ সভা করেছিল, বক্তব্য দিয়েছিল, তাদেরও বিবেচনায় আনতে হবে। ফারুক ও মুক্তাদিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের কারা ব্যবহার করেছে তা বেরিয়ে আসতে পারে। 
বৌদ্ধধর্মে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সীমারক্ষক দেবতা বলা হয়। যারা দেশের ভূখণ্ডের সীমানা রক্ষা করে, নিরীহ-নির্দোষ মানুষের জীবন রক্ষা করে, তারা দেবতুল্য সম্মান পায়। কোনো স্বাধীন দেশের কোনো দেশপ্রেমিক সৈনিক সেই দেশের মানচিত্রের একটা অংশ এবং সেই দেশের জনগণের বীরপুরুষ। ধর্মগুরুর আসন থেকে ত্রিপিটকের এই বুদ্ধবাণীগুলো আমরা পূজারিদের বোঝানোর চেষ্টা করি। কিন্তু ২৯ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পর থেকে মানুষের মধ্য থেকে সেই বিশ্বাসে আঘাত লেগেছে। এখন তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঘেরাটোপের মধ্যে থেকেও নিজেদের নিরাপদ বোধ করতে পারছে না। কারণ, সেই রাতে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদাসীনতা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান এত বড় সহিংসতায় কোনো মানুষ নিহত না হওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করেছেন, আবার বৌদ্ধরা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে না তোলায় ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তাঁকে কীভাবে বোঝাব যে ধর্মের নামে সহিংসতার শিক্ষা বৌদ্ধরা পায়নি। এখন অনেকে বলছেন ঘটনায় রামুর মানুষ অংশ নেয়নি। এটা সত্য, সবাই হামলায় অংশ নেয়নি, কিন্তু হামলাকারীদের অধিকাংশ ছিল রামুর। আমাদের পাড়ায় প্রায় ৫০টির মতো মুসলিম পরিবার আছে, এ ছাড়া আমাদের চতুর্দিকে মুসলিম পাড়া। বাইরের লোক এসে হামলা করার সুযোগ পেল কী করে? আমি যাকে পড়ালেখা শিখিয়েছি, নিজের হাতে খাইয়েছি, যে আমার বিহারে সারাক্ষণ পড়ে থাকত, সে যদি আমার ভগবানের মূর্তি ভাঙতে পারে, চোখ উঠিয়ে নিতে পারে, আমি কার ওপর ভরসা করব?
একশ্রেণীর ব্যক্তি দল বাঁচানোর জন্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেয়ে দলীয় সম্প্রীতির প্রতি বেশি যত্নশীল হয়ে পড়েছেন। কিছু সাম্প্রদায়িক স্থানীয় লোক যে এই ঘটনায় জড়িত, এই সত্যকে আড়াল করতে চাইছেন। তবে কয়েকজন স্থানীয় মুসলিম এগিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু তাঁরা ছিলেন সংখ্যায় অতি নগণ্য। তাই তাঁরা রক্ষা করতে পারেননি। 
রামু চৌমুহনীতে ঢোকার যে কয়টা প্রবেশদ্বার আছে, সেখানে চেকপোস্ট বসানো হলো না কেন। কোনো রাজনৈতিক সমাবেশে সম্ভাব্য সংঘর্ষ এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা পুলিশ বাহিনী কাঁদানে গ্যাস, জলকামান, রাবার বুলেট ব্যবহার করে। অথচ এত বড় সহিংসতা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভূমিকা রাখল না। সেদিন জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে তারা আমাদের বিহার, উপাসনালয় এবং বসতবাড়ি ধ্বংস করেছে। এখন বিচারের নামে আমাদের মন এবং বাঁচার সদিচ্ছাকে পুড়ে মারছে। তারা ক্ষমতার রাজনীতি করে। আমরা তো ক্ষমতার উচ্চাসন দাবি করি না। আমরা শুধু শান্তিতে বাঁচতে চেয়েছি। আজ এই নিরীহ মানুষগুলোকে টার্গেট করা হচ্ছে।
যারা ঘটনার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করেছে তাদের সংখ্যা নগণ্য। আজ পুরো রাষ্ট্র, পুরো সরকার তাদের চিহ্নিত করতে পারছে না। দোষ চাপানোর খেলায় মত্ত সবাই। যারা জড়িত তারা দলের কথা, দেশের কথা ভাবেনি। অথচ দল তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের উচিত মিলেমিশে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করা, এই হতভাগ্য সংখ্যালঘু নিরীহ সম্প্রদায়ের কথা ভাবা, দেশের ভাবমূর্তির কথা ভাবা। তা না হলে কোনো অপশক্তির সুযোগ নেওয়া সহজ হয়।
ঘটনার পরদিন থেকে দেশের প্রগতিশীল মানবতাবাদী ব্যক্তি, দল, সংগঠন, সংস্থা জাতি-ধর্মনির্বিশেষে যেভাবে রামুর বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, তা অভূতপূর্ব। 
অপরাধীরা যখন এই ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটায় তখন দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় না, কিন্তু অপরাধীদের সুষ্ঠু বিচার করলে কিংবা কেউ নাক গলাতে চাইলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে যায়। তাই এই ঘটনার বিচার অত্যন্ত জরুরি।
 প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু: বৌদ্ধধর্মীয় নেতা।

শনিবার, ২০ অক্টোবর ২০১২,

জামায়াত নেতা তোফাইলের গা-ঢাকা, উত্তমের মা মাসি নিজ ঘরে
তবে ছাউনি ও ভাঙ্গা বেড়া ছাড়া সবই লুটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা ॥ তদন্ত রিপোর্টের পর 
কক্সবাজার প্রশাসনে ভীতি
মোয়াজ্জেমুল হক/এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার থেকে ॥ গত ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের রামু, উখিয়া, টেকনাফ এবং চট্টগ্রামের পটিয়ায় বিহার-মন্দির ও সংখ্যালঘুদের বসতবাড়িতে সহিংস ঘটনার পর সরকারী তদন্ত কমিটি যে প্রতিবেদন গত বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের চিন্তা-ভাবনা চলছে। স্বরাষ্ট্র সচিব সিকিউএম মোস্তাক আহমেদ চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত সরকারী তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রাপ্তির বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেছেন। এ রিপোর্ট নিয়ে এখনও পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা হয়নি। তবে সরকারী দায়িত্বশীল একটি সূত্রে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে, রিপোর্ট অনুযায়ী দায়িত্বে অবহেলা, ব্যর্থতা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পক্ষে এসব ঘটনা নিয়ে কার্যকর আগাম কোন তথ্য সরকারকে প্রদান করতে না পারায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তদন্ত রিপোর্ট পেশের পর সরকার পক্ষে রিপোর্ট অনুযায়ী যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও ২২ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে সরকারী একটি সূত্রে জানানো হয়েছে। কক্সবাজার ও রামু উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তটস্থ অবস্থায় রয়েছেন।
ঘটনার পর রামু থানার ওসি ও কক্সবাজারের বিদায়ী জেলা প্রশাসককে চট্টগ্রাম থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া ছাড়া অন্য কারও বিরুদ্ধে কোন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গৃহীত হয়নি।
প্রসঙ্গত, রামুর ঘটনা নিয়ে বিএনপির পক্ষে সংসদীয় তদন্ত দলের পক্ষে দেয়া রিপোর্ট এবং সরকারী তদন্ত দলের রিপোর্টের মধ্যে ব্যাপক ব্যবধান থাকায় সচেতন মহলে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে নতুন করে। কেননা বিএনপির পক্ষ থেকে কক্সবাজার এবং চট্টগ্রামের ঘটনা নিয়ে সরাসরি সরকার এবং সরকারী দলের লোকজনকে দায়ী করা হয়েছে। পক্ষান্তরে, সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে সামগ্রিক ও পূর্বাপর ঘটনাবলী এমনকি স্থানীয় সরকারী কর্মকর্তাদের ব্যর্থতা এবং সরকারী দলের কতিপয় নেতাকর্মীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পৃক্ততাও তুলে ধরা হয়েছে। এতে করে বিএনপি সংসদীয় কমিটির তদন্ত রিপোর্ট ইতোপূর্বে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর এখন ব্যাপকভাবে নিন্দিত হচ্ছে।
এদিকে ইতোমধ্যে তদন্ত রিপোর্টের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য বিভিন্ন দৈনিকে শুক্রবার প্রকাশিত হওয়ার পর রামুসহ কক্সবাজার অঞ্চলের সাধারণ মানুষের মনে বিরোধী দল বিএনপি-জামায়াত এবং রোহিঙ্গা জঙ্গীদের ব্যাপারে ক্ষোভ আরও বেড়েছে। কেননা রামু, উখিয়া এবং টেকনাফে বৌদ্ধ-মন্দির ও বসতবাড়িতে হামলার ঘটনায় রাষ্ট্রের যেমন ক্ষতি হয়েছে, তেমনি এ অঞ্চলের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের শান্তিপ্রিয় বিশাল জনগোষ্ঠীর মানসম্মান ধুলোয় মিশে গেছে। উল্লেখ্য, কক্সবাজারের উখিয়া এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির গহীন অরণ্যে ও সীমান্ত এলাকায় এ দেশীয় এবং মিয়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। দেশীয় সন্ত্রাসী গ্রুপের সন্ত্রাসীরা জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্পটে ছড়িয়ে রয়েছে। বিশেষ করে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের বিরাট একটি অংশ জঙ্গী তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ছে ব্যাপকভাবে। এখানকার শান্তিপ্রিয় মানুষের বড় ধরনের দুশ্চিন্তা হচ্ছে এরা একদিন এ অঞ্চলকে গ্রাস করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করবে।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল বিভিন্ন সূত্রে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার রামুর ঘটনা নিয়ে সরকারী তদন্ত কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতেও রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে এবং তাদের নিয়ে কতিপয় এনজিওর বিশেষ কার্যক্রম নজরদারিতে রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।
এদিকে রামুর বৌদ্ধ জনপদে ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার বিষয়টি অবহিত হয়ে এক কালের দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার বর্তমানে জামায়াত নেতা নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান নিজেকে রক্ষা করতে ভিক্ষু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছ থেকে গণস্বাক্ষর আদায় করার তৎপরতা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা চেয়ারম্যান ও জামায়াতের সহসভাপতি তোফাইল আহমদ শুক্রবার সকাল থেকে বৌদ্ধধর্মাবলম্বী বিভিন্ন ভিক্ষু ও সম্প্রদায় নেতাদের কাছে ধর্ণা দিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানা গেছে। বান্দরবানের পুলিশ সুপারের এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জনকণ্ঠকে জানান, বান্দরবান জেলায় তো বৌদ্ধবিহারে হামলা হয়নি, তার পরও হয়ত তিনি (তোফাইল) নিজেকে রক্ষা করতে স্বাক্ষর নিতে তৎপর হতে পারেন। এ ঘটনা নিয়ে কোন জোর জবরদস্তি বা অন্যায় কিছু করা হলে বিপরীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, জামায়াত নেতা তোফাইলের বিরুদ্ধে রামুর বৌদ্ধ বিহারে হামলা-অগ্নিসংযোগ ও নাশকতা ঘটানোর মদদদাতা হিসেবে যে অভিযোগ রয়েছে, তা সরকারী কমিটির তদন্তেও উদ্ঘাটিত হয়েছে। সহিংস ঘটনার আগে নাইক্ষ্যংছড়ির মৌলভী কলিম উল্লাহ নামে এক জঙ্গীর সঙ্গে তিনি যে দুবাই সফর করে সেখানে বেশ কিছু বৈঠকও করার কথা যে ফাঁস হয়েছে তাও তদন্ত কমিটি সত্য বলে নিশ্চিত করেছে। রামুতে সহিংসতার পূর্বে উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুক থেকে পবিত্র কোরান অবমাননাকর ছবি ডাউনলোডকারী গ্রেফতারকৃত আবদুল মোক্তাদির আলীফ জামায়াত নেতা তোফাইলের ভাগ্নে সম্পর্কিত আত্মীয়। আব্দুল মোক্তাদির আলিফ সর্বপ্রথম মুঠোফোনে বিএনপি ও যুবদল নেতা যথাক্রমে মিজান মেম্বার ও কামালকে সেই ফারুক কম্পিউটার টেলিকমের দোকানে ডেকে নিয়ে যায়। উত্তমের মা ও মাসিকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যাবার প্রাক্কালে ইন্ধন যুগিয়েছে এই মিজান মেম্বার ও মোক্তাদির। অপরদিকে মুক্তাদির পুলিশী রিমান্ডে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছে বলে সূত্রে জানা গেছে। তবে রামু পুলিশ এ পর্যন্ত আলোচিত মিজান মেম্বার ও কামালকে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। জামায়াত নেতা তোফাইল ইতোপূর্বে নাইক্ষ্যংছড়ি বৌদ্ধ বিহার সংস্কার কাজে মাত্র ১৬ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে সরকারী বরাদ্দকৃত ২ মে. টন চাল আত্মসাত করারও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া কিছুদিন আগে বড়ুয়া সম্প্রদায়ের বহু লোককে উচ্ছেদ করে তিনি রোহিঙ্গা বসতি স্থাপন করতে চেয়েছিলেন। ঠান্ডাঝিরি এলাকার বড়ুয়াদের অনেকে জানায়, তাদের স্থায়ী বাসস্থান থেকে অন্যত্র চলে যেতে তোফাইল চেয়ারম্যান বার বার ধমক দিয়েছিলেন। স্থানীয় আ’লীগ নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের চাপের মুখে বড়ুয়াপাড়া উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি শেষ পর্যন্ত। দেশের জন্য বিষফোঁড়া হিসেবে চিহ্নিত উগ্রবাদী জঙ্গী ও রোহিঙ্গাদের নাইক্ষংছড়িতে স্থায়ী বসতি গড়ে তুলে এ দেশের নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট যোগাড় করে ফেলেছে। ঐ সব এলাকায় রোহিঙ্গাদের বেশির ভাগকে জঙ্গীর তৎপরতায় সম্পৃক্ত করা হচ্ছে নানা পথে আসা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে। এদিকে তদন্ত রিপোর্টের পর নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা তোফাইল শুক্রবার থেকে গা-ঢাকা দিয়েছেন। রামু-কক্সবাজার এলাকার বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য অভিযুক্ত লুৎফুর রহমান কাজল বিপদের আশঙ্কায় থমকে রয়েছেন। অজ্ঞাত স্থান থেকে তোফাইল জনকণ্ঠের কক্সবাজার অফিসকে টেলিফোনে বলেছেন, তাকে অভিযুক্ত করার ঘটনা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র। অপরদিকে এমপি কাজল শুরু থেকে ঘটনার সঙ্গে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করে যাচ্ছেন।

নিজ বসতঘরে উত্তমের মা-মাসি
হাইকোর্টের নির্দেশে বৃহস্পতিবার রাতে ১৯ দিনের বন্দী জীবন শেষে মুক্তি পেয়ে পলাতক উত্তম বড়ুয়ার মা মাধু বড়ুয়া ও মাসি আদি বড়ুয়া নিজ বাড়িতে ফিরেছেন। মা-মাসির মুক্তির খবর পেয়ে গা-ঢাকা দিয়ে থাকা উত্তমের দু’বোন জিনিয়া ও ডালিয়া বড়ুয়া দ্রুত ঘরে ফিরে এসে আনন্দে আত্মহারা হয়ে মা-মাসিকে নিয়ে দীর্ঘ সময়জুড়ে কেঁদেছে। এ সময় মা-মেয়েদের অঝোর কান্নায় হাইটুপি এলাকার পরিবেশ কিছুটা ভারি হলেও তা অল্প সময়ে কেটে যায়। উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী উত্তমের মা-মাসিকে এবং তাদের জীর্ণশীর্ণ কুঁড়েঘরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সর্বক্ষণিক প্রহরায় রয়েছে পুলিশ। দুই মেয়ে মা’র কাছে ফিরে এলেও তাদের পিতা সুদত্ত বড়ুয়া কোথায়, এখনও সন্ধান মেলেনি বলে জানায় বড় মেয়ে ডালিয়া বড়ুয়া। কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে মাধু বড়ুয়া ও আদি বড়ুয়া বৃহস্পতিবার রাতেই নিজ ভিটায় গিয়ে দেখেন, শুধু ঘরের ছাউনি ও ভাঙ্গা বেড়া ছাড়া আর কিছুই নেই। ঘরের আসবাবপত্রসহ সব কিছু নিয়ে গেছে দুষ্কৃতকারীরা। শুক্রবার সকালে আত্মীয়দের কাছ থেকে হাঁড়ি-পাতিল ও চাল এনে খাওয়া-দাওয়ার প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু হয়েছে। তবে পুত্র উত্তম বড়ুয়া ঘটনার শুরু থেকে লাপাত্তা হওয়ার ব্যাপারে তারা কিছুই জানে না বলে জানান। উল্লেখ্য, রামুর ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে যে তালিকা সরকার পক্ষে প্রণীত হয়েছে, তাতে এই পরিবারের নাম নেই।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধি দল
কক্সবাজারের রামু উখিয়া ও টেকনাফে সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ বিহার, মন্দির ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা। শুক্রবার বেলা ১১টায় ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তের নেতৃত্বে ২৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল টেকনাফের হোয়াইক্ষ্যং, উখিয়ার পালংখালী এবং রামুর ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ বিহার ও বাড়িঘর পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা নিয়ে রাজনীতি নয়, প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ও ধৈর্য সহকারে কাজ করতে হবে। পরে ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির ও বাড়িঘর, অগ্নিকা-ে ভস্মীভূত বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার ও লুটপাট হওয়া বসতবাড়ি পরিদর্শন করে ১১৩ ক্ষতিগ্রস্তর মাঝে আর্থিক অনুদান প্রদান করেন। এসময় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রফেসর ড. জিনু বোধি ভিক্ষু, প্রকৌশলী পরিমল চৌধুরী, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তাপস হোড়, অধ্যাপিকা রন্জু বড়ুয়া, অন্ন বড়ুয়া, সবুজ বড়ুয়া, নন্দন বড়ুয়া, শিশির বড়ুয়া, অরুপ বড়ুয়া, অধ্যাপক প্রিয়তোষ শর্মা চন্দন ও উদয় শংকর পাল মিঠু।        http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2012-10-20&ni=113187


উগ্র মৌলবাদীদের আস্তানা হয়েছে নর্থ সাউথ
পাঠচক্রের আড়ালে শিবির ও হিযবুতের বৈঠক                                                                            
শনিবার, ২০ অক্টোবর ২০১২

বিভাষ বাড়ৈ ॥ যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র কাজী মোহাম্মদ রেজওয়ানুল আহসান নাফিসের গ্রেফতারের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে পুরো শিক্ষাঙ্গনে। উচ্চ শিক্ষাঙ্গন বিশেষত দেশের নামী বেসরকারী বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে খ্যাত নর্থসাউথে রীতিমতো কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে পড়ার দশা। এতদিন ইমেজ নষ্ট হওয়ার ভয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হিজবুত তাহরীর ও ছাত্রশিবিরের বেপরোয়া কর্মকা- গোপন রেখেছিল কর্তৃপক্ষ। এমনকি জঙ্গীবাদী কর্মকা-ের দায়ে এক শিক্ষক ও চার ছাত্রের আটকের পর পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা হয়। কিন্তু নাফিজের গ্রেফতারে কর্তৃপক্ষ আর লুকিয়ে রাখতে পারলেন না। সরকারের একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন এমনকি প্রতিষ্ঠানের প্রগতিশীল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ট্রাস্টি বোর্ডের দুই সদস্য ও ৫ শিক্ষককের প্রত্যক্ষ মদদে উগ্র মৌলবাদীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে নর্থসাউথ। হিজবুত তাহরীর ও শিবিরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি সক্রিয় থাকা একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ও এটি। যেখানে পাঠচক্রের আড়ালে হচ্ছে শিবির ও হিযবুত তাহরীরের ঐক্যবদ্ধ বৈঠক। 
সর্বশেষ পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন নর্থসাউথ কর্তৃপক্ষ। নাফিজের আটকের পরই বৃহস্পতিবার বৈঠক করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তথ্য নেয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছে ট্রাস্টি বোর্ড। নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনসহ কোন উগ্রবাদী গোষ্ঠীর কর্মকা-কে উড়িয়ে দিলেন না ট্রাস্টি বোর্ডের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ও বর্তমান সদস্য মোঃ শাহজাহান জনকণ্ঠকে বলেন, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে। কিন্তু এত মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য আমাদের পক্ষে যাছাই করা কঠিন। আমি সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতি আহ্বান জানাই, আপনারা ছাত্র-শিক্ষকদের পরিচয়, রাজনৈতিক আদর্শ খতিয়ে দেখুন। তথ্য যাচাই করে অভিযুক্ত হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে দেশের আইন অনুসারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। তিনি জানান, ইতোমধ্যেই উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্টদের বলেছি, তথ্য যাচাই বাছাই করে যেনে বুঝে নিয়োগ দিতে হবে। এদিকে ট্রাস্টি বোর্ডের একাধিক সদস্য জানিয়েয়েছেন, জঙ্গীবাদী কর্মকা-ের দায়ে এ পর্যন্ত এখানে এক শিক্ষক আটক ও চার শিক্ষক বহিষ্কার হয়েছেন। চার ছাত্রের আটক ছাড়াও বহিষ্কার করা হয়েছে ১৪ জন ছাত্র। যাদের বিরুদ্ধে জঙ্গীবাদী কর্মকা-ের প্রত্যক্ষ অভিযোগ ওঠায় বহিষ্কার করা হলেও বলা হয়েছে, পরীক্ষা না দেয়া, খারাপ ফলসহ নানা দুর্বলতার কথা। সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, উচ্চবিত্তের কাছে বাইরে থেকে একটা ভাল ইমেজ তৈরি হলেও দিনের পর দিন জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ট্রাস্টি বোর্ডের দুই সদস্য ও ৫ শিক্ষককের প্রত্যক্ষ মদদে উগ্র মৌলবাদীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে পাঠচক্রের আড়ালে হচ্ছে শিবির ও হিযবুত তাহরীরের ঐক্যবন্ধ বৈঠক। এর পেছনে শক্তি হিসেবে কাজ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন শিক্ষক-পরিচালনা পরিষদ কর্মকর্তা। জানা গেছে, হিযবুত তাহরীর নামে জঙ্গীবাদের বিস্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে পাঁচ শিক্ষককে। গোয়েন্দা প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছে, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে হিযবুত তাহরীরের বীজ ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। ১৯৯২ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর উত্থান ঘটতে থাকে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা ভিসি ছিলেন ডান পন্থী ও বিএনপির মতাদর্শী এক অধ্যাপক। উদ্যোক্তা হিসেবে আরও ছিলেন যাঁরা তাঁদের প্রত্যেকে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে এ ক্ষেত্রে জামায়াতের এক নীতিনির্ধারক শুরু থেকেই ট্রাস্টি বোর্ডের প্রভাবশালী সদস্য হয়ে জঙ্গীবাদী কর্মকা-কে লালন করছেন। কেবল তাই নয়, এখন অন্য সদস্যরাই অভিযোগ করছেন, সদস্য হিসেবে কোটায় তিনি যেসব ছাত্রকে এখানে ভর্তি করিয়েছেন তাঁরা এখন প্রতিষ্ঠানের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। এসব ছাত্রের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। 
সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো এই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সাবেক এক উপাচার্য ছিলেন রাজনৈতিকভাবে জামায়াত মতাদর্শে বিশ্বাসী। তার মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী একজনকে খ-কালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। পরিচালনা পরিষদের তিন সদস্যের বিরুদ্ধে হিযবুত তাহরীরের কর্মকা-ে জড়িত থাকার বিষয়টি সুস্পষ্ট বলে জানা গেছে। এর মধ্যে জামায়াতের অন্যতম নীতিনির্ধারক হিসেবে পরিচিত একজন নিয়ন্ত্রণ করছেন পুরো উগ্রবাদী চক্রটিকে। এদিকে জানা গেছে, নর্থসাউথে শিবিরের কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত সাথী শাখা আছে, যারা নানা উপায়ে কাজ করে, কর্মী সংখ্যা ১০০ জনের বেশি। দাওয়াতী কাজে তাহরীর নিজস্ব নামে কাজ করে না। কিছুদিন আগে র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির চার শিক্ষকের নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যায়। এই চার শিক্ষক ঐ ইউনিভার্সিটিতে ‘পাঠসভা’র নামে ঐ ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রদের মধ্যে হিযবুত তাহরীরের প্রচার চালান। এ বিষয়ে তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. হাফিজ জিএ সিদ্দিক বলেছিলেন, ইউনিভার্সিটির শিক্ষকরা হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে জড়িত- বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে কোন শিক্ষক এ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত তা রিপোর্ট দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শুক্রবার তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ এসেছে অনেকের বিষয়েই। তবে সব কিছু তো প্রমাণ করা যায়না। অন্যদিকে হিজবুত তাহরিরের কেন্দ্রীয় কর্মকা- সম্পর্কে গোয়েন্দা সংস্থার সর্বশেষ তথ্য হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আটক মহিউদ্দিনের জায়গায় যুগ্ম সমন্বয়কারী কাজী মোরশেদুল হক সক্রিয় তৎপরতা চালাচ্ছেন। সংগঠনের সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম মাওলা। নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক শেখ তৌফিক হিযবুত তাহরীরের রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। 
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2012-10-20&ni=113188
শনিবার, ২০ অক্টোবর ২০১২, ৫ কার্তিক ১৪১৯
রামুতে বৌদ্ধদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ ॥ আমীর-উল ইসলাম
স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম বলেছেন, রামুতে বৌদ্ধমন্দির ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনা শুধু পরিকল্পিতই নয়, এটি একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। পিকআপ-ট্রাক ও বাসে করে গানপাউডার ও গ্রেনেডসহ হামলার সরঞ্জাম ও মানুষ ভাড়া করে এনে চতুরতার সঙ্গে এ তা-ব চালানো হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে।
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মালেক উকিলের স্মরণে বঙ্গবন্ধু একাডেমী আয়োজিত রামুর ঘটনা বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র : দেশবাসীর করণীয়’ শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।
সংবিধান প্রণেতা এ খ্যাতনামা আইনজীবী আরও বলেন, বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করাই ছিল এই হামলার লক্ষ্য। দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এটি একটি আন্তর্জাতিক চক্রান্ত। তিনি বলেন, রামুর ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ, সীমান্তে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বন্ধে ওই অঞ্চলে চৌকস সেনা সদস্যদের একটি শক্তিশালী টিম সার্বক্ষণিক মোতায়েন রাখা দরকার। পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) একটি প্রশিক্ষিত টিমকেও রাখতে হবে।
জাতীয় সংসদে বিশেষ একটি অধিবেশন ডেকে আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ সকল প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের নেতাদের ঐক্যবদ্ধভাবে রামুর ঘটনায় নিন্দা এবং এ ঘটনা রোধে পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ছাড়া দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সভাপতি মোজাফ্ফর হোসেন পল্টুর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফয়েজউদ্দিন মিয়া ও বঙ্গবন্ধু একাডেমীর মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজি।

শনিবার, ২০ অক্টোবর ২০১২, ৫ কার্তিক ১৪১৯
প্রশাসনিক তদন্ত রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি
স্টাফ রিপোর্টার ॥ কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধ মন্দির ও বসতিতে হামলার ঘটনা নিয়ে সরকারের প্রশাসনিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। শুক্রবার বিকেলে নির্দলীয় সরকার ও সরকারের অত্যাচার-নির্যাতনের প্রতিবাদে রাজধানীর খিলগাঁও জোরপুকুর খেলার মাঠে ১৮ দলীয় জোট আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ দলের এ অবস্থানের কথা জানিয়ে বলেন, রামুর ঘটনায় প্রশাসনিক তদন্ত নয়, মূল রহস্য উদ্ঘাটন করতে উচ্চ পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে। অন্যথায় ধরে নেয়া হবে সরকারই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
দেশকে জঙ্গী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করে বিদেশীদের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে রামুর ঘটনা বর্তমান সরকারই ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সরকার অনেক কৌশলের আশ্রয় নেবে। তাই সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই এ সরকারের পতন হবে।
মওদুদ বলেন, বিএনপি সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে না। সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য হবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা। আসন্ন দুর্গাপূজা সফল করতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সহায়তা করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান তিনি। দলীয় সরকারের অধীনে আগামীতে দেশে কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুধু আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরানো নয়, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্যই নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।
খিলগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি ইউনুস মৃধার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি অধ্যাপক মজিবুর রহমান প্রমুখ।
দুপুরে রাজধানীর পান্থপথে শমরিতা হাসপাতালে জীবন্মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চিকিৎসাধীন ভাষাসৈনিক ও প্রবীন রাজনীতিবিদ অলী আহাদকে দেখতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ মন্দির ও বসতিতে হামলার ঘটনায় সরকারীভাবে প্রশাসন যে তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, রামুর ঘটনায় প্রকৃত ঘটনা তুলে না ধরে বিরোধী দলের ওপর দায় চাপিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এ ঘটনায় সরকার জড়িত বলে তিনি দাবি করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মওদুদ বলেন, রামুর ঘটনায় বিদেশী কূটনীতিকদের কাছে নালিশ নয়, দেশের জন্য কলঙ্কজনক ঘটনার সত্য তুলে ধরেছে বিএনপি। কিন্তু আওয়ামী লীগ এ নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারী তদন্ত প্রতিবেদনে সত্য বেরিয়ে আসেনি। সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী ওই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে।
লুট হওয়া টাকা ফিরিয়ে দিতেই খালেদার আন্দোলন হান্নান শাহ ॥ মহাজোট সরকারের আমলে লুট হওয়া টাকা জনগণকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্যই খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১৮ দলীয় জোটের আন্দোলন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আসম হান্নান শাহ। শুক্রবার বিকেলে যাত্রাবাড়ী থানা এলাকার মাতুয়াইল মৃধাবাড়ি খেলার মাঠে ১৮ দলীয় জোট আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। ঈদের পর ১৮ দলীয় জোট বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে মন্তব্য করে তিনি এ আন্দোলনে সবাইকে শরিক হওয়ার আহ্বান জানান।
হান্নান শাহ বলেন, হলমার্ক কেলেঙ্কারি, শেয়ারবাজার লুট, পদ্মা সেতুর দুর্নীতি, রেলওয়ে দুর্নীতির সঠিক তদন্ত না করে সরকার তাদের আশ্রয় দিচ্ছে। এর ফলে দেশে সর্বস্তরে দুর্নীতির আখড়া গড়ে উঠেছে। জনগণের ভোটে আমরা সরকার গঠন করতে পারলে এসব দুর্নীতি তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকার সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতের প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক তাসনীম আলম, ঢাকা মহানগর জামায়াত নেতা নৃরুল ইসলাম বুলবুল, জাগপা ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক সানাউল হক সানু, বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল মতিন সাউদ, ডেমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন রতন প্রমুখ।


শনিবার | ২০ অক্টোবর ২০১২ 
বৌদ্ধপল্লীতে হামলার রিপোর্ট
নিরাময়ে সম্মিলিত প্রয়াস চাই
কক্সবাজারের রামু উপজেলার বৌদ্ধপল্লী ও মন্দিরে হামলা এবং অগি্নসংযোগের ঘটনায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের কর্মী-সমর্থকদের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে সরকারি তদন্ত কমিটি। তবে এ ঘটনায় কে বা কারা পেছনে থেকে কলকাঠি নেড়েছে, দেশি-বিদেশি কোনো স্বার্থান্বেষী মহল এতে জড়িত ছিল কি-না, বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে জমা দেওয়া সরকারি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত এ সম্পর্কিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, তদন্ত প্রতিবেদনটিতে স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মনোভাব এবং বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রশাসনের সমন্বয়হীনতার কারণে হামলা ও অগি্নসংযোগের ঘটনা প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া যায়নি। সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, এমনকি ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বাররাও এ ঘৃণ্য কর্মে নিজেদের জড়িয়েছেন বা নিষ্ক্রিয় থেকে নির্বিঘ্নে অপরাধ সংঘটিত হতে দিয়েছেন। নির্বাচিত প্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, স্থানীয় সামাজিক গণ্যমান্য ব্যক্তি_ কেউই বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য তখন এগিয়ে আসেননি। বরং সবাই কোনো না কোনোভাবে ওই জঘন্য ঘটনায় অংশ নিয়েছেন, না হয় উদাসীন থেকে পরোক্ষে ইন্ধন জুগিয়েছেন। তাই রামুর ঘটনাকে দেশের আর দশটি সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনার সঙ্গে মেলানো যায় না। বরং রামুর ঘটনার অভিমুখ আমাদের সমাজের মধ্যে সাম্প্রদায়িক মনোভাবের ক্ষতিকর বিভাজনরেখা অতিক্রমের ইঙ্গিত দেয়। এটা বাঙালি সংস্কৃতির অসাম্প্রদায়িক চেতনারও পরিপন্থী। সুতরাং রামুর বৌদ্ধপল্লীর ঘটনাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। সরকার ও বিরোধী দলের পরস্পরের বিরুদ্ধে দোষ দিয়ে বা সবাই মিলে প্রশাসনের ঘাড়ে এর দায়ভার চাপিয়ে নিজেদের দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে লাভ নেই। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. নুরুল ইসলামকে প্রধান করে গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটি তাদের ৬৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রস্তুত করার আগে সরেজমিন তদন্ত ও ১২২ ব্যক্তির বক্তব্য গ্রহণ করে। কারা কীভাবে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত হলো, প্রশাসনের ভূমিকা কী ছিল_ ইত্যাকার বিষয়গুলো চুলচেরা বিশ্লেষণের মাধ্যমে ঘটনার স্বরূপ উন্মোচনের একটা কষ্টসাধ্য চেষ্টা তদন্ত প্রতিবেদনে রয়েছে। আমাদের সামাজিক-রাজনৈতিক-প্রশাসনিক পর্যায়ে কীভাবে রক্ষণশীলতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়ছে, তা উপলব্ধি করার ক্ষেত্রে রামুর ঘটনা দৃষ্টি খুলে দেওয়ার কাজটি করতে পারে। তাই সরকার, বিরোধী দল, প্রশাসন এবং সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও শক্তিগুলোকে সম্মিলিতভাবে রামুর বৌদ্ধপল্লীতে সংঘটিত হামলা ও অগি্নসংযোগে সৃষ্ট ক্ষত নিরাময়ের জন্য প্রচেষ্টা নিতে হবে। আমাদের সমাজকে অধোগতি থেকে বের করে আনার জন্য সবাইকে সুদীর্ঘ সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। সরকারি তদন্ত কমিটি রিপোর্টটিতে দেশি-বিদেশি কোনো স্বার্থান্বেষী মহল এতে জড়িত কি-না তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে পারেনি। এখানেই রিপোর্টটির অপূর্ণতা। তবে রামুর বৌদ্ধপল্লীতে হামলা ও অগি্নসংযোগের আগের দিন নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসায় গোপন বৈঠক, বৈঠকে যোগদানকারী অন্তত একজনকে উত্তেজনা ছড়ানোর দায়ে আটক করা ও স্বীকারোক্তি আদায় এবং ওই চেয়ারম্যানের জুলাই মাসে ১৫ দিনের জন্য দুবাই সফর ও তার সঙ্গে রোহিঙ্গা সংগঠনের ঘনিষ্ঠ সংযোগ থাকার বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্তের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য করে তুলেছে। হয়তো এই যোগসূত্রের মধ্যেই লুকিয়ে আছে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের সংযোগ। আমরা সরকারি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ এবং এই ঘৃণ্য ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে ইন্ধনদাতাদেরও খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানাই। পাশাপাশি নতুন করে আমাদের ঐতিহ্যবাহী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাবরণ তৈরির কাজটি সবাইকে সম্মিলিতভাবেই করতে হবে। আসুন, আমরা সে লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে এগোই। তদন্ত রিপোর্ট আমাদের সে তাগিদই দেয়।
http://www.shamokal.com/


1:27 pm BdST, Saturday, Oct 20, 2012

সংখ্যা লঘুরা শান্তনা কোথায় খুজে পাবে, তারা কি এদেশের সন্তান না?

ক্যাটাগরী: 

রামুর ঘটনা বাংলার ইতিহাসে এক কালিমা যা দেশের গন্তীয়ে পেরিয়ে ছাপ ফেলেছে বিশ্ব পরিমন্তলে। এ আগুন কখন আবার কাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খাড় করবে তা বিধাতাই ভাল জানেন। রামুর ঘটনার পর থেকেই সরকার পক্ষ আর বিরোধী পক্ষের পরস্পর দোষারোপ মিশ্রিত বক্তব্য আড়ালে প্রকৃত দোষীরা যে নিরাপদ আশ্রয় খুজে নিচ্ছে তা কি আমাদের সরকার ও বিরোধী দলের রাজনীতিবিদরা বোঝেন না।
এদেশ অতীত থেকেই মুসলমান হিন্দু, বেৌদ্ধ, খৃষ্টান ও অন্যান্য ধর্মালম্বীদের আবাসভূমি। স্বাধীনতার সময় সংখ্যালঘু হিসেবে হিন্দু সম্প্রদায় যে আগুনের স্বীকার হয়েছে তা ইতিহাস হয়ে আছে। যে অপরাধে আজ রামুর নিরিহ বেৌদ্ধরা সাম্প্রদায়িকতার আগুনে পুড়ল তার পিছনে কি আমরা মুসলমান দায়ি না যারা আর একজনের ঘরে আগুন লাগিয়ে বেহেশত বাসি হতে অপার হয়ে বসে আছি তারা দায়ি। কেন কোন কারনে এরকম করা হলো। রামুর বৌদ্ধরাকি বাংলা মায়ের সন্তান না? আমাদের স্বাধীনতায় কি তাদের অবদান নেই। আজ যে যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার চলছে তাদের মধ্যে কি কেউ হিন্দু, বৌদ্ধ বা খৃষ্টান আছে।
রামুর ঘটনা নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে যতটা করা হয়েছে তা একেবারে দায়িত্বহীন বলা চলে না। কিন্তু বিরোধী দল কি করল? তারা তদন্তের নামে যে নাটক করল তা দ্বারা তারা ক্ষমতালিপ্সু একটি জনবিচ্ছিন্ন দল তা কি প্রমান করে না। নাকি এধরনের ঘটনা তাদেরকে রাজনীতি ও বিরোধিতা করার সুযোগ করে দিল। তারা কি বুঝল না সাম্প্রদায়িকতার যে আগুন লেগেছে তা যদি নির্লিপ্ততার পানি দ্বারা নিভাতে চেষ্টা করি তবে এর আগুনে সবাই একদিন আবারও জ্বলতে হবে। ইতিহাস কখনও কাউকে ক্ষমা করে না। বিরোধীদল (বিএনপি) এর উচিত ছিল এব্যাপারে সরকার যাতে কোন রুপ ভূল না করে তা ফলোআপ করা এবং সঠিক পদক্ষেপ নিতে সরকারকে বাধ্য করা।
যাই হোক হিন্দু , বৌদ্ধ, খৃস্টানরা এদেশে যারা জন্মছে তারা এদেশেরই সন্তান। সাম্প্রদায়িকতার আগুন আমাদের বন্ধনে ক্ষত সৃষ্টি করলেও ভালবাসা, সহমর্মিতা আর সহযোগীতার হাত অচিরেই সে ক্ষত সারিয়ে বলে আমার বিশ্বাস।


বৌদ্ধ মন্দির পোড়াসনি পুড়িয়েছিস মন মন্দির
ব্লগ 
ক্যাটাগরী: 

গত কয়েকদিনের প্রথম আলো সহ অন্যান্য লিডিং পত্রিকার হেড দেখে দেখে মনটা এত খারাপ হয়ে গেছে যে আজ বসলাম প্রিয় স্থান ব্লগে। কেউ পড়ুক আর নাই পড়ুক অন্তত ব্লগে কথা গুলো লিখে মনের ঘৃনা প্রকাশ করি ইসলামের নামধারী নরপিশাচদের। কি করে পারলি তোরা এহেন কাজ করতে। পারলি কি করে তোরা মন মন্দিরে আঘাত করতে। আজ যদি কেউ মসজিদে এমন কাজ করতো তোদের কেমন লাগতো । আসলে তোদের কোন অণুভূতিই হতো না কারন তোদের তো কোন অনুভূতিই নাই। যদি প্রতিশোধ হিসেবে এহেন কাজ করে থাকিস তবে বলবো বড় ভুল করেছিস যার খেসারত দিতে হবে সারা বিশ্বের শত কোটি মুসলমানদের। তোরা শুধু বৌদ্ধ সম্প্রদায়কেই আঘাত করিস নাই আঘাত করেছিস সর্বস্তরের সচেতন মানুষের সে কি বৌদ্ধ, কি খৃষ্টান, কি হিন্দু কি মুসলমান।
ইসলামের ইতিহাসের এমন কোন নজির দেখাতে পারবি তোরা প্রতিশোধের আগুন এভাবে জ্বালানো হয়েছে। কি করলি তোরা ধিক শত ধিক মুমিন সেই ব্যক্তি যার দ্বারা অন্য কেউ কোনভাবে ক্ষতি গ্রস্থ হয় না। তাহলে তো তোরা মুসলমান , মোমিন নয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বারবার বলেছেন – হে মোমিন গন । হে মুসলমান গন নয়। ওই নরপিশাচেরা তোরা যদি মুসলমান হয়ে থাকিস তোদের বলি তোরা মুমিন হতে চেষ্টা কর তা না হলে নাজাত পাবি না। আর যদি মন্দির পোড়ানো মুসলমান থেকে যাস তবে যে আগুন তোরা জ্বালিয়েছিস সে আগুনে একদিন তোরাই পুড়বি।

২০ অক্টোবর শনিবার ২০১

ফানুস উড়িয়ে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপনের সিদ্ধান্ত ।। বৌদ্ধ সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে :শিল্পমন্ত্রী
শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বলেছেনপ্রবারণা পূর্ণিমায় ফানুস উড়ানো বাঙালি বৌদ্ধ সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা নষ্ট হলে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি উৎসাহিত হবে। 
খবর বাসস’র

তিনি বলেনসারাদেশে প্রবারণা পূর্ণিমায় ফানুস উড়ানোর পাশাপাশি যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের সাথে কঠিন চীবর দানোৎসব পালন করে ফানুসের আলোতে অপশক্তির অন্ধকার দূর করতে হবে। মন্ত্রী গতকাল বিকেলে রাজধানীর কমলাপুরে ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারে বাংলাদেশের বৌদ্ধ সমাজ সুরক্ষা কমিটির নেতাদের সাথে মতবিনিময়কালে একথা বলেন। মতবিনিময় সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় সারাদেশে ফানুস উড়িয়ে ২৯ অক্টোবর প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন এবং আসন্ন কঠিন চীবর দানোৎসব যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে উদযাপন করবে। বৌদ্ধ সমাজ সুরক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ও সংঘনায়ক শুদ্ধানন্দ মহাথের’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ডপ্রণব কুমার বড়ুয়াকর্নেল (অব.) মৃনাল কান্তি বড়ুয়াবিশ্বপতি বড়ুয়াঅশোক বড়ুয়াকর্নেল (অব.) সুমন কুমার বড়ুয়া ও ডাউত্তম বড়ুয়া। সভায় বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারা ২৯ সেপ্টেম্বর রামুসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দিরে অগ্নিসংযোগলুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেনকতিপয় ধর্মান্ধ দুষ্কৃতকারী বৌদ্ধ মন্দির পুড়িয়ে দেশের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য নস্যাতের অপচেষ্টা চালিয়েছে। তারা বলেনএ ঘটনায় বৌদ্ধ জনগণের সাথে বাংলাদেশের সরকার ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী জনগণ যেভাবে তীব্র ক্ষোভনিন্দা ও ধিক্কার জানিয়েছে তা নজিরবিহীন। প্রবারণা পূর্ণিমায় ফানুস উড়ানো বন্ধ থাকলে হামলাকারী কুচক্রীমহল লাভবান হবে উল্লেখ করে তারা আরো বলেনসরকার পরিস্থিতি মোকাবেলায় যেভাবে ত্বরিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি দেশের বৌদ্ধ সমাজ কৃতজ্ঞ থাকবে।


No comments:

Post a Comment