Saturday, November 3, 2012

রামুর ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ বিহার বাড়িঘর পুনঃনির্মাণ কাজ পুরোদমে চলছে



লেখক: কক্সবাজার প্রতিনিধি  |  রবিবার, ৪ নভেম্বর ২০১২, ২০ কার্তিক ১৪১৯
সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যদের উদ্যোগ
রামু, উখিয়া ও পটিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত ১৯টি বৌদ্ধবিহার সরকারি অর্থায়নে সেনাবাহিনী পুনঃনির্মাণ ও মেরামত করছে । বিজিবি পুনঃনির্মাণ ও মেরামত করছে রামুতে পুড়ে যাওয়া ও ভাংচুরের শিকার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ৩২টি বাড়ি ও দোকানঘর।
সরকার ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধবিহার নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণের জন্য বরাদ্দ করেছে ১২ কোটি টাকা। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেই পুরনো ঐতিহ্যমণ্ডিত অবয়ব ফিরিয়ে আনা হবে। এজন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়াারিং কোর ১৭ ইসিবি’কে। সেনা সদস্যরা বেশ ক’দিন আগে থেকেই বৌদ্ধবিহারগুলোর নকশা তৈরিসহ আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তা বাস্তবায়নে নেমে পড়েছেন । গুরুত্ব ও ক্ষয়ক্ষতির দিক বিবেচনা করে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে এসব বৌদ্ধবিহার নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধবিহারগুলোর অধিকাংশ নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে  রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বৌদ্ধ নেতা তরুণ বড়ুয়া জানান, রামুর ১১টি মন্দিরের মধ্যে কেন্দ্রীয় সীমা বিহার তিনতলাবিশিষ্ট বিহার তৈরির কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। আধুনিক কারুকার্য সমৃদ্ধ হবে এটি। পর্যায়ক্রমিকভাবে  লাল চিং বিহার,  মৈত্রী বিহার, জাদিপাড়া আর্যবংশ বৌদ্ধবিহার ও উত্তর মিঠাছড়ি বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র, অপর্ণাচরণ বৌদ্ধবিহার, শাদা চিং বৌদ্ধবিহার, উখিয়াঘোনা জেতবন বিহার, উত্তর মিঠাছড়ি প্রজ্ঞামিত্র বনবিহার এবং চাকমারকুল বৌদ্ধবিহার মেরামত ও পূনঃনির্মাণের কাজ সম্পন্ন হবে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতের সহিংস ঘটনায় কক্সবাজারস্থ ১৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিজিবি ব্যাটালিয়ন পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর থেকেই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি ও দোকানঘর নির্মাণ ও মেরামতের কাজ শুরু করে দেয়। ইতিমধ্যে ৩টি নতুন বাড়ির নির্মাণ সম্পন্ন, ১১টি বাড়ির বাউন্ডারি মেরামত এবং ভাংচুরে ক্ষতিগ্রস্ত ৭টি বাড়ির টিনের ছাউনি সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
এ ব্যাপারে ১৭ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল খালেকুজ্জামান ইত্তেফাককে জানান, পুড়ে যাওয়া বাড়ি ও দোকানঘরের মধ্যে ১১টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ইতিমধ্যে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৬/৭ লাখ টাকা করে পেলেও নানা কারণে তারা পুনঃনির্মাণ কাজে হাত দেয়নি। এসব পরিবারকে মটিভেশনের মাধ্যমে বাড়ি ও দোকানঘর পুনঃনির্মাণের কাজে নেমেছে বিজিবি। এসব বাড়ি ও দোকানঘর নির্মাণ বাবদ প্রয়োজনীয় কাঠ, টিন ও মিস্ত্রি খরচ যোগান দিচ্ছে বিজিবি। আর ক্ষতিগ্রস্তরা দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় ইট ও বালি। এভাবে উঠে দাঁড়াচ্ছে রামুর ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধবিহার ও বসতি। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতের সহিংস ঘটনায় রামুর ১২টি বৌদ্ধবিহার অগ্নিসংযোগ ও হামলার শিকার হয়। পরদিন সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা উখিয়া ও চট্টগ্রামের পটিয়ায়। এতে উখিয়ায় ৬টি ও পটিয়ায় একটি বৌদ্ধবিহার ভাংচুরের শিকার হয়।

No comments:

Post a Comment