Thursday, February 28, 2013

কুমিল্লায় প্রতিমা ভাঙচুর, বাঁশখালী ও নোয়াখালীতে হিন্দু বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ


নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী অফিস ও ব্রাহ্মণপাড়া প্রতিনিধি | তারিখ: ০১-০৩-২০১৩ 


চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার দক্ষিণজলদি ধোপাপাড়ায় গতকাল সন্ধ্যায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা আগুন দেন। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের রাজগঞ্জ বাজার ও আশপাশের এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার হামলা চালিয়ে দুটি মন্দির ও আটটি হিন্দু বাড়ি ভাঙচুর এবং পাঁচটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে জামায়াত-শিবির। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর এই হামলা চালানো হয়।
এদিকে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় একটি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে।
বাঁশখালীর দক্ষিণজলদির হিন্দুদের বাড়িতে আগুন দিলে কমপক্ষে ২০টি ঘর পুড়ে যায়। এ সময় হামলায় এবং আগুনে ওইসব বাড়ির ১৬ জন আহত হন। এঁদের মধ্যে দুজন বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মারা যান। আরও চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির ইকবাল হামলা ও হতাহতের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীর অনেকে জানান, সকাল থেকেই বেগমগঞ্জের রাজগঞ্জ বাজার ও আশপাশের এলাকায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা মহড়া দিতে শুরু করেন। সাঈদীর মামলার রায় ঘোষণার পর বেলা দুইটার দিকে তাঁরা একযোগে লাঠিসোঁটা নিয়ে রাজগঞ্জ বাজারের পাশে বাইন্নাবাড়ির সামনের কালীমন্দিরসহ দুটি মন্দির ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা বাইন্নাবাড়ি ও নাপিতবাড়িসহ আটটি হিন্দু বাড়িতে হামলা চালান ও ভাঙচুর করেন।
হামলাকারীরা কাপড়, টাকা, ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র ও স্বর্ণালংকার লুট করেন। বেলা দুইটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত দফায় দফায় ভাঙচুর ও লুটপাট চলে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠাকুরবাড়ির এক গৃহবধূ বলেন, ‘দুপুরে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীসহ শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁদের বাড়িতে হামলা চালান। এ সময় তাঁরা ভাঙচুর, বসতঘরের বেড়া কুপিয়ে চোখের সামনেই আগুন ধরিয়ে দেন।’
বেগমগঞ্জের ইউএনও খন্দকার নুরুল হক বলেন, এলাকায় বিপুলসংখ্যক র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার উত্তর চান্দলা গ্রামের বাসিন্দারা জানান, সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর ওই গ্রামের ইকবাল হোসেন কুমিল্লা-মিরপুর সড়কে একটি মাইক্রোবাস ও একটি অটোরিকশার কাচ ভাঙচুর করেন। এরপর সড়কের পাশে শিবমন্দিরের বটগাছের নিচে শীতলা দেবীর একটি প্রতিমা ভাঙচুর করেন। স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে তিনি দ্রুত পালিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ, ইউএনও ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, বিকেলে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ইউএনও মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় ওই যুবকের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

No comments:

Post a Comment