Friday, February 1, 2013

বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি: এইচআরডব্লিউ


অনলাইন ডেস্ক | তারিখ: ০১-০২-২০১৩
বাংলাদেশে গত বছর মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।র্যাবের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমেছে—মন্তব্য করে বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এ ছাড়া প্রতিবেদনে রাজনৈতিক কর্মী গুম, সুশীল ও মানবাধিকারকর্মীদের ওপর নানা চাপ, নারীর প্রতি সহিংসতা, রোহিঙ্গা বিষয়ে সরকারের অবস্থানসহ নানা বিষয়ে সংস্থাটি তাদের পর্যালোচনা তুলে ধরেছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনটি ৬৬৫ পৃষ্ঠার। এই প্রতিবেদনে বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশের গত বছরের মানবাধিকার পরিস্থিতির মূল্যায়ন করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের ‘আরব বসন্ত’-পরবর্তী সময়ের একটি বিশ্লেষণও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড এডামস বলেছেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ, মানবাধিকারকর্মী ও সমালোচকদের জন্য উদার পরিবেশ প্রদান ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থার অঙ্গীকার করে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু সরকার এগুলো পূরণে আদৌ কিছু করছে বলে মনে হচ্ছে না।"

কী কারণে মানবাধিকার পরিস্থিতি খারাপ
প্রতিবেদনে বাংলাদেশের গত বছরের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে দাবি করা হয়, সরকার দেশের রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের কর্মকাণ্ড সীমিত করে দিয়েছে। আইন লঙ্ঘনের পরও সরকার নিরাপত্তা বাহিনীকে আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি না করে রক্ষা করছে। গুম ও হত্যার তদন্ত করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এ ছাড়া সরকার বেসরকারি সংস্থাগুলোকে (এনজিও) তদারকি করার জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন করেছে। আর এসব কারণেই ২০১২ সালে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

র্যাবের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমে আসায় স্বাগত
প্রতিবেদনে এইচআরডব্লিউ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) ‘কুখ্যাত’ উল্লেখ করে বলেছে, গত বছর এই বাহিনীর মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমেছে। বিষয়টিকে সংস্থাটি স্বাগত জানিয়েছে। একই সঙ্গে এটাও বলেছে, এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা এখনো বেশ বেশি।

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম অব্যাহত
এইচআরডব্লিউ তাদের প্রতিবেদনে বলছে, বাংলাদেশে ‘ক্রসফায়ার’-এর নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং বিরোধী দলের সদস্য ও রাজনৈতিক কর্মীদের গুম হয়ে যাওয়ার ঘটনা অব্যাহত আছে। একজন শীর্ষস্থানীয় শ্রমিক নেতাকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে এবং অন্য শ্রমিক নেতাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সুশীল সমাজ ও মানবাধিকারকর্মীদের ওপর চাপ ও নজরদারি বেড়েছে বলে তারা অভিযোগ করেছে।

নারীর প্রতি সহিংসতা চলছেই
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে বাংলাদেশে কঠোর আইন থাকলেও তার বাস্তবায়ন খুবই নগণ্য। এ দেশে ধর্ষণ, যৌতুকের জন্য নির্যাতন এবং অ্যাসিড নিক্ষেপ, যৌন হয়রানি, ফতোয়ার নামে অন্যায় শাস্তি প্রদানসহ নানা পারিবারিক নির্যাতন অব্যাহত আছে। বৈষম্যমূলক পারিবারিক আইনের কারণে বহু নারী বিবাহ-বিচ্ছেদ বা তালাকের সময় নানা বিপত্তির সম্মুখীন হন।

রোহিঙ্গা-বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন
মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে গত বছর মুসলমান রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৌদ্ধদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে প্রতিবেদনে বলা হয়, তখন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করলে সরকার আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা অগ্রাহ্য করে।

No comments:

Post a Comment